প্রিয়, এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী বন্ধুরা। সকলে আসা করি ভালো আছো। তোমাদের জন্য আজকে আমাদের এই আর্টিকেলে থাকছে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তির বিস্তারিত তথ্য ২০২৪ সংক্রান্ত A to Z সবকিছু।
আশাকরি এই আর্টিকেলের মাধ্যমে তোমরা একাদশ শ্রেণীর ভর্তির সব কিছু সহজেই জানতে পারবে।
চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল ১২ মে ২০২৪ তারিখে প্রকাশিত হয়েছে। উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে ২৬ মে থেকে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, ১৩ মে বৈঠকের মাধ্যমে চূড়ান্ত করা হবে ভর্তির যাবতীয় নীতিমালা এবং দিনক্ষণ।
চলতি বছরে ২৬ মে প্রাথমিকভাবে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তির আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়ে শেষ হবে আগামী ১১ জুন।
একাদশ শ্রেণীতে ভর্তির বিস্তারিত ২০২৪
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার জানিয়েছেন, পূর্বের বছরের ন্যায় এ বছরও ভর্তির প্রাথমিক ধাপগুলো সম্পন্ন হবে।
পূর্বের বছরের মত এবারও ১৫০ টাকা আবেদন ফি জমা দিয়ে সর্বনিম্ন ৫টি কলেজ এবং সর্বোচ্চ ১০ টি কলেজে চয়েজ লিস্ট এর মাধ্যমে আবেদন করা যাবে।
বাংলাদেশে হাতেগোনা কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়া একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য কোন রকম বাছাই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় না।
মেধা, কোটা এর ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের ভর্তির সুযোগ প্রদান করা হয়।
২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষায় মোট ১১ টি শিক্ষা বোর্ড থেকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলেন ২০ লাখ ১৩ হাজার ৫৯৭ জন শিক্ষার্থী।
একাদশ শ্রেণিতে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৬ লাখ ৭২ হাজার ১৫৩ জন। একাদশ শ্রেণিতে ছাত্র এবং ছাত্রী ভর্তি নেওয়ার জন্য আসন ফাঁকা রয়েছে ২৫ লক্ষ।
একাদশ শ্রেণীতে ভর্তির বিস্তারিত জানার জন্য আমাদের সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন।
একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হতে কি কি কাগজপত্র লাগবে?
কলেজে টাকার পরিমান এবং যেসব কাগজপত্র লাগবে তার কিছুটা ভিন্নতা পরিলক্ষিত হতে পারে।
তবে আমরা এখানে যে সব ডকুমেন্টস এর নাম বলব সেগুলোর প্রায় সব কলেজে প্রয়োজন হবে। ভর্তি হওয়ার আগে স্ব স্ব কলেজে যোগাযোগ করলে যেসব ডকুমেন্টস লাগবে তা বিস্তারিতভাবে জানা যাবে।
একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হতে কি কি কাগজপত্র লাগবে তা নিচে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো:
একাদশ শ্রেণীতে ভর্তির বিস্তারিত তথ্য ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
- ভর্তির আবেদন ফরম কলেজ থেকে সংগ্রহ করতে হবে। আবেদন ফরমটি সঠিকভাবে পূরণ করে কলেজে জমা দিতে হবে।
- কিছু কলেজে আবেদন ফরম অনলাইনের মাধ্যমে পূরণ করতে হয়। সেসব কলেজে আবেদন করতে চাইলে ঘরে বসে অনলাইনে করতে পারবেন।
- এসএসসি পরীক্ষায় পাশের মূল মার্কশীট এর দুইটি ফটোকপি।
- এসএসসি পাশের টেস্টিমনিয়াল অথবা প্রশংসা পত্র। এক্ষেত্রে দুইটি কপি করে ফটোকপি প্রয়োজন হবে।
- এসএসসি পরীক্ষার মূল এডমিট কার্ড, রেজিস্ট্রেশন কার্ড এর দুইটি করে ফটোকপি।
- প্রতিষ্ঠান ভেদে ৫-১০ টি করে শিক্ষার্থীদের পাসপোর্ট সাইজের ছবির প্রয়োজন হবে। স্টাম্প সাইজের ছবি লাগবে ২-৫ টি।
- শিক্ষার্থীর অভিভাবকের প্রতিষ্ঠান ভেদে ৫-১০ টি করে পাসপোর্ট সাইজের ছবির প্রয়োজন হবে। স্টাম্প সাইজের ছবি লাগবে ২-৫ টি।
- শিক্ষার্থীর জন্ম নিবন্ধন কার্ডের ফটোকপি।
- শিক্ষার্থীর অভিভাবকের ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি, এখানে দুই কপি করে সত্যায়িত ফটোকপি কাছে রাখা ভালো।
- ২০২১ এবং ২০২২ সালে যারা এসএসসি পরীক্ষার অংশগ্রহণ করেছেন এবং মাঝখানে পড়ালেখায় বিরতি দিয়েছেন তাদের ক্ষেত্রে শিক্ষ বিরতি সনদপত্রের প্রয়োজন হবে,
- মুক্তিযোদ্ধা, পোষ্য কোটায় যারা আবেদন করছেন তাদের কোটার সনদপত্র দরকার হবে।
একাদশ ভর্তি ২০২৪ কত তারিখ শুরু হবে ?
এখানে উল্লেখ্য যে, ২৬ মে প্রাথমিকভাবে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তির আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে এবং শেষ হবে আগামী ১১ জুন (সম্ভাব্য)।
একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি হওয়ার জন্য উপরিউক্ত ডকুমেন্টস গুলো অবশ্যই লাগবে।
এই সকল ডকুমেন্টস যাদের থাকবে তারা অনলাইনে নির্ধারিত ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে শিক্ষার্থীদের একাদশ শ্রেণির ভর্তির আবেদন করতে পারবেন।
একজন শিক্ষার্থীর সর্বোচ্চ ১০ টি কলেজে আবেদন করতে পারলেও মেধা, কোটা ও পছন্দক্রমের ভিত্তিতে শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পাবেন।
বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীরা বোর্ডে ম্যানুয়ালি ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন।
এছাড়াও যারা বাইরের দেশ থেকে বাংলাদেশে এসে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি হতে চাচ্ছেন তারা ম্যানুয়ালি ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন।
একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির নীতিমালা ২০২৪
মাধ্যমিক এবং উচ্চ শিক্ষা বিভাগ কর্তৃক একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির নীতিমালা ২০২৪ প্রণয়ন করা হয়েছে।
২০২৪ – ২৫ সালের একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির নীতিমালা নিম্নরূপ:
২০২২, ২০২৩ ও ২০২৪ সালে দেশের যে কোন শিক্ষা বোর্ড ও বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীগণ ২০২৪ – ২৫ শিক্ষাবর্ষের নীতিমালার অন্যান্য বিধানবলি সাপেক্ষে কলেজ এবং সমমানের প্রতিষ্ঠানে ভর্তির যোগ্য বলে বিবেচিত হবে।
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উত্তীর্ণ সহ অন্যান্য বছরের শিক্ষার্থীরা ও ভর্তির জন্য বোর্ডে ম্যানুয়ালি আবেদন করতে পারবেন। বিজ্ঞান গ্রুপ হতে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী বিজ্ঞান, মানবিক এবং ব্যবসায়িক শিক্ষা বিভাগের যেকোনো একটি তে আবেদন করতে পারবেন।
মানবিক গ্রুপ হতে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা মানবিক এবং ব্যবসায়িক শিক্ষক বিভাগের যেকোনো একটি তে আবেদন করতে পারবেন।
এবং ব্যবসায়িক শিক্ষা বিভাগ হতে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক গ্রুপের যেকোনো একটিতে আবেদন করতে পারবেন।
যেকোন গ্রুপ থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ও সংগীত গ্রুপের যেকোনো একটিতে আবেদন করতে পারবেন।
মাদ্রাসা বোর্ড থেকে যেসব শিক্ষার্থীর বিজ্ঞান বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছেন তারা বিজ্ঞান, মানবিক এবং ব্যবসায়িক শিক্ষা বিভাগের যেকোনো একটি তে আবেদন করতে পারবেন।
এবং সাধারণ ও মুজাব্বিদ গ্রুপ থেকে যেসব শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছেন তারা মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা গ্রুপের যেকোনো একটিতে আবেদন করতে পারবেন।
ভোটের জন্য কোন রকম ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার প্রয়োজন নেই।
এসএসসি এবং সমমান পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে এবং মেধা ক্রমে শিক্ষার্থীদের কলেজে ভর্তির সুযোগ প্রদান করা হবে।
কোন প্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য সংশ্লিষ্ট কলেজ কর্তৃপক্ষ ন্যূনতম যোগ্যতা নির্ধারণ করতে পারবে।
কলেজ এবং সমমান প্রতিষ্ঠানের ভর্তি সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে।
একাদশ শ্রেনীতে ভর্তি হতে সর্বনিম্ন কোন কলেজে কত পয়েন্ট লাগবে
বর্তমানে বাংলাদেশের সরকারি এবং বেসরকারি মিলিয়ে ১৩১৪টি কলেজ রয়েছে।
এর মধ্যে সরকারি কলেজগুলোতে ভর্তি হওয়ার জন্য ৪.৫০ পয়েন্ট এর প্রয়োজন হয়।
আর বিভিন্ন বেসরকারি কলেজে ২.৫০ থেকে ৫.০০ পয়েন্ট প্রাপ্ত যে কোনো শিক্ষার্থী সাবজেক্ট চয়েজ এর উপর ভিত্তি করে কলেজে ভর্তি হতে পারেন।
যেকোনো কলেজে ভর্তির জন্য আবেদন করার পূর্বে সেই কলেজে কত পয়েন্ট প্রয়োজন হবে তা আগেই জেনে নিনঃ
একাদশ শ্রেণীতে ভর্তির বিস্তারিত নিয়ে সর্বাধিক জিজ্ঞাসিত প্রশ্নগুলি
১) ঢাকার সবচেয়ে ভালো কলেজ কোনটি?
উঃ ঢাকার সবচেয়ে ভালো কলেজ হল নটর ডেম কলেজ, ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ, আদমজি ক্যান্টনমেন্ট কলেজ, হলিক্রস কলেজ, ঢাকা কলেজ, সেন্ট জোসেফ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়।
২) একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির রেজাল্ট কিভাবে দেখব?
উঃ xiclassadmission.gov.bd ওয়েবসাইটের মাধ্যমে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তির রেজাল্ট দেখা যাবে।
৩)জিপিএ 4.50 কি ভালো?
উঃ জিপিএ ৫.০০ নিঃসন্দেহে সবচেয়ে ভালো রেজাল্ট। জিপিএ 4.50 পয়েন্ট ও একটি ভালো রেজাল্ট।