ইদানিং সার্টিফিকেট হারিয়ে ভীষণ চিন্তায় পড়ে যান অনেক শিক্ষার্থী। চিন্তার কোন কারণ নেই। সার্টিফিকেট বা প্রবেশপত্র হারিয়ে গেলে যা করবেন এবং কিভাবে এই সার্টিফিকেট ফিরে পাবেন তা জানবো আজকে এই লেখার মাধ্যমে। সার্টিফিকেট, নম্বরপত্র বা প্রবেশপত্রের মত মূল্যবান শিক্ষা সংক্রান্ত কাগজপত্র হারালে বা নষ্ট হয়ে গেলে ঘাবড়ানোর মত কিছু নেই। কিভাবে কি করতে হবে সেটা নিয়েই আলোচনা করছি।

নম্বরপত্র, সার্টিফিকেট বা প্রবেশপত্র হারিয়ে গেলে যা করবেন
প্রথম ধাপে যা করবেনঃ ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, সার্টিফিকেট, নম্বরপত্র বা প্রবেশপত্র হারিয়ে গেলে অবহেলা কিংবা দেরি না করে এই বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।তার জন্য প্রথমেই আপনার এলাকার নিকটবর্তী থানায় সার্টিফিকেট বা প্রবেশপত্র হারানো নিয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে হবে। সাধারণ ডায়েরি বা জিডির একটি কপি অবশ্যই নিজের কাছে রেখে দিতে হবে।
দ্বিতীয় ধাপে যা করবেনঃ এই বিষয় নিয়ে যে কোনো একটি দৈনিক পত্রিকায় একটি বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে। বিজ্ঞপ্তিতে আপনার নাম, শাখা, পরীক্ষার কেন্দ্র, রোল নম্বর, পাসের সাল, বোর্ডের নাম এবং কিভাবে সার্টিফিকেট, নম্বরপত্র অথবা প্রবেশপত্র হারিয়ে গেছে তা খুব সুন্দর ভাবে সংক্ষেপে উল্লেখ করতে হবে।
তৃতীয় ধাপে যা করবেনঃ থানায় জিডি ও পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার পর যেতে হবে যে বোর্ডের অধীনে পরীক্ষা দিয়েছেন সেই শিক্ষা বোর্ডে। শিক্ষা বোর্ডের ‘তথ্যসংগ্রহ কেন্দ্র’ থেকে একটি আবেদনপত্র সংগ্রহ করার পর একদম নির্ভুলভাবে তা পূরণ করতে হবে।
চতুর্থ ধাপে যা করবেনঃ আবেদনের নির্ধারিত ফি সোনালী ব্যাংকের ডিমান্ড ড্রাফটের মাধ্যমে বোর্ডের সচিব বরাবর জমা করতে হবে। টাকা জমা দেয়ার পর আবেদন কার্যকর হবে। এরপর আবেদনপত্রটির সাথে মূল ব্যাংক ড্রাফট, পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির কাটিং ও থানার জিডির কপি জমা দিতে হবে।
আবেদনপত্রে যা যা পূরণ করতে হবে
সার্টিফিকেট বা প্রবেশপত্র হারিয়ে গেলে যা করবেন তা নিয়ে বিস্তারিত
- আবেদনপত্র পূরণের সময় সবার প্রথমেই উল্লেখ করতে হবে আপনি কোন পরীক্ষার (মাধ্যমিক নাকি উচ্চমাধ্যমিক) কী হারিয়েছেন এবং কী কারণে আপনি আবেদন করছেন।
- আবেদনপত্রের বিভিন্ন অংশে বাংলায় স্পষ্ট অক্ষরে এবং ইংরেজি বড় অক্ষরে পূর্ণ নাম, মাতার নাম, পিতার নাম, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম, রোল নম্বর, পাসের বিভাগ/জিপিএ, শাখা, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, শিক্ষাবর্ষ এবং জন্মতারিখসহ বিভিন্ন তথ্য লিখে পূরণ করে দিতে হবে।
- এরপরের অংশে জাতীয়তা, যে দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে সেটির নাম ও তারিখ এবং সোনালী ব্যাংকের যে শাখায় ব্যাংক ড্রাফট করেছেন সে শাখার নাম, ড্রাফট নম্বর ও তারিখ অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে।
- আবেদনপত্রে প্রতিষ্ঠান প্রধানের একটি সুপারিশের প্রয়োজন হবে। প্রতিষ্ঠান প্রধানের দস্তখত ও নামসহ সিলমোহর থাকতে হবে। তবে প্রাইভেট প্রার্থীদের আবেদনপত্রে অবশ্যই গেজেটেড কর্মকর্তার স্বাক্ষর ও নামসহ সিলমোহর থাকা বাধ্যতামূলক।
ব্যতিক্রম কি আছে জেনে নিন
নষ্ট হয়ে যাওয়া সনদপত্র/নম্বরপত্র/একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্টের অংশবিশেষ থাকে তবে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে না। এর জন্য আপনাকে থানায় জিডিও করতে হবে না। এক্ষেত্রে আবেদনপত্রের সঙ্গে ওই অংশবিশেষ জমা দিলেই হবে। তবে সনদে ও নম্বরপত্রের অংশবিশেষে নাম, রোল নম্বর, কেন্দ্র, পাসের বিভাগ ও সন, জন্মতারিখ এবং পরীক্ষার নাম উল্লেখ করা না থাকলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না।
অপরদিকে বিদেশি নাগরিক হলে ব্যাংক ড্রাফটসহ নিজ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। সাময়িক সনদ, নম্বরপত্র, প্রবেশপত্র ফি (জরুরি ফিসহ) ১৩০ টাকা লাগবে। এছাড়া ত্রি-নকলের জন্য ১৫০ টাকা এবং চৌ নকলের জন্য ২৫০ টাকা ব্যাংক ড্রাফটের মাধ্যমে জমা করতে হবে। তবে টাকার পরিমান কম বেশিও হতে পারে। ওয়েবসাইট থেকে বর্তমানে কি কি শর্ত আছে তা জেনে নিতে পারেন।
পোষ্টটি লিখেছেন

- নাঈমুর রহমান দুর্জয়, শিক্ষা বিষয়ক বাংলা কমিউনিটি ওয়েবসাইট "এডু হেল্পস বিডি"র প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক হিসেবে নিয়োজিত আছেন। ঢাবি অধিভুক্ত সাত কলেজ এর সরকারি বাঙলা কলেজে এমবিএ করতেছেন।
সর্বশেষ খবর
শিক্ষা সংবাদ২০২২.০৩.১৬বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে এইচএসসি প্রোগ্রামে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়২০২২.০১.২৪অনার্স ৪র্থ বর্ষ পরীক্ষার্থীদের বিসিএস অনিশ্চিত
রুটিন২০২২.০১.২৪সাত কলেজের স্থগিত হওয়া ডিগ্রি পরীক্ষার নতুন তারিখ ঘোষণা
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়২০২২.০১.১৭মাস্টার্স শেষপর্ব ভর্তির রিলিজ স্লিপের মেধা তালিকা দেখবেন যেভাবে